গ্যাস-বিদ্যুতে ভর্তুকি কী করে দেব: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বার্তাসেন্টার সংবাদদাতা

বুধবার, ১৮ জানুয়ারি ২০২৩, ২৩:১১

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির এমপি মুজিবুল হক চুন্নুর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গ্যাস যে মূল্যে কেনা হবে সেই মূল্যই গ্রাহককে দিতে হবে, সেক্ষেত্রে দাম বাড়তে পারে। এটা ভুলে যাবেন না ভর্তুকির টাকা তো জনগণেরই।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বিদ্যুতের দাম কম থাকলে আমাদের বিত্তশালীরা লাভবান হন। যারা সাধারণ মানুষ তারা ঠিকমতো বিল দেয়। বিত্তশালীরা আরাম-আয়েশ করবে। আর স্বল্প মূল্যে পাবে- তা কী করে হয়? সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা আমাদের পরিকল্পনা নিচ্ছি।

মুজিবুল হক চুন্নু পয়েন্ট অব অর্ডারে ফ্লোর নিয়ে আইএমএফের ঋণের শর্তে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানো হচ্ছে অভিযোগ উত্থাপন করে সংসদে বলেন, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ফলে মূল্যস্ফীতির চাপ সরকার কিভাবে সামলাবে?

ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা বেসরকারি খাতের ব্যবসায়ী আছেন, এখানেও (সংসদে) আছেন তাদের আমি তো স্পষ্ট বলেছি, নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস আমি দিতে পারব, কিন্তু যে মূল্যে গ্যাস আমরা বাইরে থেকে কিনে নিয়ে আসলাম সেই মূল্য যদি আপনারা দেন আমরা গ্যাস দিতে পারব। আমরা বাল্কের যেটুকু বাড়ানোর বাড়িয়েছি। তারা যদি নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ চায় তাহলে যে মূল্যে কিনে আনব সেই মূল্য তাদের দিতে হবে। এখানে ভর্তুকি দেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই।

আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগকে হারাতে পারে এমন কোনো দল নেই: স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের জন্য টিসিবির ফেয়ার প্রাইস কার্ড দিয়ে দিয়েছি। যেখানে ৩০ টাকা কেজিতে চাল কিনতে পারে। তেল, চিনি, ডাল সীমিত আয়ের মানুষ ন্যায্য মূল্যে কিনতে পারে। সেই ব্যবস্থাটা করে দিয়েছি।

এর থেকে যারা নিম্নআয়ের তাদের জন্য আমরা ১৫ টাকায় চাল দিচ্ছি। সেই সঙ্গে তেল, ডাল ও চিনিও দেওয়া হচ্ছে। আর একেবারে হতদরিদ্র যারা কিছুই করতে পারে না, তাদের বিনা-পয়সায় খাদ্য সরবরাহ করছি। স্বল্প আয়ের মানুষ যাতে কষ্টে না পড়ে সেদিকে দৃষ্টি রেখে এ ব্যবস্থা করছি। কৃষিতে আমরা ব্যাপকভাবে ভর্তুকি দিচ্ছি।

আরও পড়ুন: একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শিক্ষাই হাতিয়ার: শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।

তিনি বলেন, ইংল্যান্ডের মতো জায়গায় খাদ্যে মূল্যস্ফীতি ১৩ দশমিক ৩ শতাংশ। এটা একটা উন্নত দেশের কথা বললাম। পৃথিবীর সব দেশে এ অবস্থা বিরাজমান। বাংলাদেশ এখনো সেই অবস্থায় পড়েনি।

ভর্তুকি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গ্যাস উৎপাদন ও বিতরণ এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণে যদি ৪০, ৫০ ও ৬০ হাজার কোটি টাকা আমাকে ভর্তুকি দিতে হয়, তাহলে সেটা কী করে দেব? এর ফলে দাম বাড়লে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করার যে চেষ্টা সেটা করে কিছুটা সফলতা দেখাতে পেরেছি।

শেখ হাসিনা বলেন, ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে। এ সময় তিনি সবাইকে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনে বিদ্যুতের ব্যবহার ৫০ শতাংশ কমিয়ে দিয়েছি। এভাবে যদি সবাই উদ্যোগ নেয়, তাহলে বিদ্যুৎ ব্যবহার সাশ্রয়ী হতে পারে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *