শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে বরিশালকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স
বার্তাসেন্টার সংবাদদাতা
শুক্রবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ২২:৩৮বিপিএল ফাইনাল ম্যাচে ফরচুন বরিশালকে হারিয়ে এবার চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। তীব্র উত্তেজনাকর ম্যাচে সাকিবের বরিশালকে মাত্র ১ রানে হারায় ইমরুলের কুমিল্লা। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ৭৩ রান তুলেছিল কুমিল্লা। অর্থাৎ ওভারপ্রতি ১২.১৬ করে রানরেট। দর্শকরা ধরেই নিয়েছিল দুইশো না হলেও কাছাকাছি যাবে কুমিল্লার সংগ্রহ। কিন্তু মুজিব-ব্রাভোরা তা হতে দেননি। দুর্দান্ত বোলিংয়ে কুমিল্লাকে ভুগিয়েছেন তারা। শেষ দিকে মঈন-রনির ব্যাটে ৫১ বলে ৫৩ রান যোগ করে কুমিল্লা। ৩২ বলে ৩৮ রান করে মঈন ফিরলে ভাঙে এই জুটি। সর্বোচ্চ ২৩ বলে ৫৭ রান করেন নারিন। শেষ ৫ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ৩৭ রান তুলতে পেরেছে কুমিল্লা। ৯ উইকেটে ১৫১ রানে থেমেছে কুমিল্লার ইনিংস।
শেষ ওভারে জয়ের জন্য বরিশালের প্রয়োজন ছিল ১০ রান। বোলিংয়ে আসেন তরুণ পেসার শহিদুল ইসলাম। প্রথম ৫ বলে দেন মাত্র ৭ রান। শেষ বলে বরিশালের দরকার ছিল ৩ রান। উভয় দলের ড্রেসিং রুম, গ্যালারি ও টিভি পর্দার সামনে থাকা দর্শকদের মনে তখন উৎকন্ঠা। বল ডেলিভারি করলেন শহিদুল ইসলাম। কিন্তু সেই বলে মাত্র ১ রান নিতে সক্ষম হয়েছে বরিশাল। এতে ১ রানে জয় পেয়েছে ইমরুল কায়েসের দল।
শুক্রবার মিরপুর শের-ই-বাংলায় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে নির্ধারিত ওভার শেষে ৯ উইকেটে ১৫১ রান তুলেছে কুমিল্লা। বিপিএলের অষ্টম আসরে চ্যাম্পিয়ন হতে বরিশালের সামনে লক্ষ্য ১৫২ রান।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ওপেনার সুনিল নারিনের ব্যাটিং তাণ্ডবে উড়ন্ত সূচনা পায় কুমিল্লা। মাত্র ২৩ বলে সাজানো তার ইনিংসটিতে ছিল ৫টি ছক্কা ও সমানসংখ্যক চারের মার। তার ঝড়ো ব্যাটিংয়ের সুবাদে পাওয়ারপ্লে-তে কুমিল্লার স্কোর দাঁড়ায় ৭০ রান। তিনি ২৩ বল খেলে ৫৭ রান করে আউট হওয়ার পর কুমিল্লার ব্যাটিংয়ে ধস নামে।
৫.২ ওভারের সময় মেহেদী হাসান রানার বলে বাউন্ডারিতে দাঁড়ানো নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে ক্যাচ তুলে দেন এই ক্যাবিবীয়ান। সে সময় কুমিল্লার স্কোর ছিল ২ উইকেট হারিয়ে ৬৯ রান। এর পরই ছন্দপতন ঘটে।
তার আগে দলীয় ৪০ রানের সময় কুমিল্লা শিবিরে প্রথম আঘাতটি হানেন সাকিব আল হাসান। দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে লিটন দাসকে বোল্ড করেন তিনি। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়তে থাকে। শেষ দিকে মঈন আলি ৩৮ ও আবু হায়দার রনি ১৯ রান করেন। ইমরুল কায়েস ১২ রান করেছেন। আর কেউই বলার মতো স্কোর করতে পারেননি।
বরিশালের বোলারদের মধ্যে মুজিব উর রহমান ও শফিকুল ইসলাম ২টি করে এবং সাকিব আল হাসান, ডোয়াইন ব্রাভো ও মেহেদী হাসান রানা একটি করে উইকেট নেন।
কুমিল্লার বোলারদের মধ্যে ৪ ওভারে মাত্র ১৫ রান খরচায় ২ উইকেট শিকার করেন সুনীল নারাইন। এছাড়া তানভীর ইসলাম ২টি এবং মুস্তাফিজুর রহমান ও শহিদুল ইসলাম একটি করে উইকেট নেন। বাকি দুটি রানআউট।
ব্যাটিংয়ে বরিশালের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৮ রান করেন ওয়ানডাউনে নামা সৈকত আলি। মাত্র ৩৪ বলে সাজানো তার ইনিংসটিতে ছিল একটি ছয় ও ১১টি চারের মার। ক্রিস গেইল করেন ৩৩ রান। এই দুই জন যতক্ষণ ক্রিজে ছিলেন ততক্ষণ মনে হচ্ছিল ম্যাচটা সহজেই জিতে যাবে ফরচুন বরিশান। কিন্তু বিধাতা যে অন্য কিছু লিখে রাখছে। ১২.১৫ ওভারে তাদের রান যখন ১০৭, তখন নারাইনের বলে এলবিডব্লিউর শিকার হন গেইল। এর পরই দলটির ছন্দপতন ঘটে।
কেউই দাঁড়াতে পারেননি। নুরুল হাসান সোহান ১৪, সাকিব আল হাসান ৭ ও নাজমুল হাসান শান্ত ১২ রান করেন। শেষ ৩ ওভারে (১৮ বল) বরিশালের প্রয়োজন ছিল ১৮ রান। ১৮তম ওভার করতে এসে মাত্র ২ রান খরচায় এক উইকেট তুলে নেন নারাইন। এর পরের ওভারে মুস্তাফিজের হাতে বল তুলে দেন ইমরুল কায়েস। তখন বরিশালের সামনে সমীকরণ ১২ বলে ১৬ রান। ওই ওভারে ৬ রান খরচায় ১ উইকেট নেন ফিজ। এর পরের গল্পটা কেবল কুমিল্লার।
বোলিংয়ে আসেন তরুণ পেসার শহিদুল ইসলাম। প্রথম ৫ বলে দেন মাত্র ৭ রান। শেষ বলে বরিশালের দরকার ছিল ৩ রান। বল ডেলিভারি করলেন শহিদুল ইসলাম। কিন্তু সেই বলে মাত্র ১ রান নিতে সক্ষম হয়েছে বরিশাল। এতে বরিশালকে ১ রানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
Comments