বিতর নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম
বার্তাসেন্টার সংবাদদাতা
শুক্রবার, ৪ নভেম্বর ২০২২, ১২:৩১বিতর আরবি ‘আল-বিতরু’ শব্দ থেকে উদ্ভুত। এর শাব্দিক অর্থ বেজোড়। বর্ণনাভেদে বিতর নামাজ তিন বা এক রাকাত। হাদিস শরিফে বিতর নামাজের রাকাত ও ধরন নিয়ে বর্ণনার বৈচিত্র রয়েছে।
হানাফি মাজহাব মোতাবেক বিতর নামাজ তিন রাকাত। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, ‘রাসুল (সা.) বিতরের নামাজ তিন রাকাত আদায় করতেন।’ (সুনান দারু কুতনি, হাদিস : ১৬৫৯; বাদাইয়েউস সানায়ি, খণ্ড : ০১, পৃষ্ঠা : ২৭২)
বিতর নামাজ কত রাকাত
বিতরের নামাজের এই পদ্ধতি হাদিস থেকে সুপ্রমাণিত। রাসুলুল্লাহ (সা.) সাধারণত তাহাজ্জুদের পর বিতর পড়তেন এবং বিতর তিন রাকাত পড়তেন। তিন রাকাতের দ্বিতীয় রাকাতে তাশাহহুদের জন্য বসতেন, কিন্তু সালাম ফেরাতেন না। সালাম ফেরাতেন সবশেষে তৃতীয় রাকাতে।
যেমন- আবু সালামা ইবনে আব্দুর রহমান থেকে বর্ণিত, তিনি আয়েশা (রা.)-কে জিজ্ঞাসা করেন, রমজানে নবীজির নামাজ কেমন হতো? জবাবে তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) রমজানে এবং রমজানের বাইরে ১১ রাকাতের বেশি পড়তেন না। প্রথমে চার রাকাত পড়তেন, যার সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা কোরো না! এরপর আরো চার রাকাত পড়তেন, যার সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা তো বলাই বাহুল্য! এরপর তিন রাকাত (বিতর) পড়তেন। (সহিহ বুখারি : ১/১৫৪, হাদিস ১১৪৭; সহিহ মুসলিম : ১/২৫৪, হাদিস ৭৩৮; সুনানে নাসায়ি ১/২৪৮, হাদিস ১৬৯৭)।
সাদ ইবনে হিশাম (রহ.) বর্ণনা করেন, আয়েশা (রা.) তাকে বলেছেন, রাসুল (সা.) বিতরের দুই রাকাতে সালাম ফেরাতেন না। (সুনানে নাসায়ি ১/২৪৮; হাদিস ১৬৯৮; মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা ৪/৪৯৪, হাদিস ৬৯১২)।
ইমাম হাকেম (রহ.) হাদিসটি বর্ণনা করার পর বলেন, হাদিসটি বুখারি ও মুসলিমের শর্ত মোতাবেক সহিহ।
বিতর নামাজের নিয়ম
বিতর নামাজও অন্য ফরজ নামাজের মতো। তবে নিয়মের ক্ষেত্রে কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে দুই রাকাত নামাজ পড়ে প্রথম বৈঠকে বসে তাশাহহুদ পড়বে, কিন্তু সালাম ফেরাবে না। তারপর তৃতীয় রাকাত পড়ার জন্য উঠে সুরা ফাতিহা পড়বে এবং অন্য কোনো সুরা বা আয়াত মিলাবে। কিরাত (সুরা বা অন্য আয়াত মিলানোর পর) শেষ করার পর তাকবির বলে দুহাত কান পর্যন্ত পর্যন্ত উঠিয়ে তাকবিরে তাহরিমার মতো হাত বাঁধবে। তারপর দোয়া কুনুত পড়বে। দোয়া কুনুত পড়ে আগের মতো রুকু, সিজদার পর শেষ তাশাহহুদ, দরুদ, দোয়া মাসুরা পড়ে সালাম ফিরানোর মাধ্যমে নামাজ সমাপ্ত করবে।
বিতরের নামাজের এই পদ্ধতি বিভিন্ন হাদিসে বর্ণিত হয়েছে এবং সাহাবিদের আমলের মাধ্যমে সুপ্রমাণিত।
মহানবী (সা.) সাধারণত তাহাজ্জুদের পর বিতর নামাজ পড়তেন এবং বিতর তিন রাকাত পড়তেন। তিন রাকাতের দ্বিতীয় রাকাতে তাশাহহুদের জন্য বসতেন, কিন্তু সালাম ফেরাতেন না। বরং তৃতীয় রাকাতে সবশেষে সালাম ফেরাতেন।
ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা ও আমিরুল মুমিনিন উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)-ও এভাবে বিতর পড়তেন। তার সূত্রে মদিনাবাসীরাও বিতর নামাজ এভাবে গ্রহণ করেছেন। (মুস্তাদরাক আলাস সহিহাইন : ১/৩০৪, হাদিস : ১১৮১)।
কিছু তথ্য: Dhaka Post
Comments