অমর একুশে ফেব্রুয়ারি, শহিদ মিনারে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

বার্তাসেন্টার সংবাদদাতা

মঙ্গলবার, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৭:৫৩

আজ অমর একুশে ফেব্রুয়ারি। ‘মহান শহীদ দিবস’ ও ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’। ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার প্রথম প্রহরে ভাষা আন্দোলনে জীবন উৎসর্গ করা বীরদের প্রতি জাতির পক্ষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন তাঁরা।

অমর একুশে শহিদ মিনারে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী

রাত ১২টা ১ মিনিটে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রথম শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি। রাষ্ট্রপতির পরই প্রধানমন্ত্রী শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এসময় অমর একুশের ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ সেই কালজয়ী গানটি বাজানো হয়। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

চিরভাস্বর অমর একুশে ফেব্রুয়ারি। বাঙালির প্রেরণার প্রতীক। ভাষা আন্দোলনের ৭১ বছর পেরিয়ে এলো জাতি। প্রতিটি বাঙালির বুকে আজ বেজে উঠবে আলতাফ মাহমুদের সুরে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর সেই চিরঅম্লান কবিতা ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/ আমি কি ভুলিতে পারি।’

একুশের প্রথম প্রহরে রাত ১২টা ১ মিনিটে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষাশহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনা মহামারির কারণে দুই বছর পর এবার তারা সশরীরে ভাষাশহিদদের শ্রদ্ধা জানালেন। এরপর স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ অন্যান্য মন্ত্রী ও দলের জ্যেষ্ঠ নেতৃবৃন্দ ভাষাশহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

আরও পড়ুন: বিধ্বস্ত হয়ে ফিরলেন গুম হওয়া রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

এসময় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর জাতীয় সংসদের স্পিকার, প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রী পরিষদের সদস্য, ডেপুটি স্পিকার ও বিরোধী দলীয় নেতারা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন তিন বাহিনীর প্রধান, সম্মানিত ভাষা সৈনিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, অনুষদের ডিন ও হলের প্রাধ্যক্ষরা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাঙালি জাতির মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব অপরিসীম। এই আন্দোলনের মধ্য দিয়েই একটি অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, ভাষাভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থা গঠনের ভিত রচিত হয়েছিল। আমি বাংলাসহ বিশ্বের সব ভাষাশহিদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই।

উল্লেখ্য, বিগত কয়েক বছর করোনা মহামারির কারণে শহীদ দিবস পালনে বিধিনিষেধ থাকলেও এবার আর আগের কড়াকড়ি নেই। পুরো শহীদ মিনার এলাকাকে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে, যেখানে ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা, ভাষা সম্পর্কিত বিভিন্ন শিল্পকর্ম স্থাপন করা হয়েছে।

একুশে ফেব্রুয়ারি সরকারি ছুটির দিন। এদিন দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ভবনে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত এবং কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে। দিবসটি পালন উপলক্ষ্যে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সব স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনসমূহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। আজিমপুর কবরস্থানে ফাতেহা পাঠ ও কোরআন খানির আয়োজনসহ দেশের সব উপাসনালয়ে ভাষাশহিদদের রুহের মাগফিরাত কামনায় প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *